Biography

সৈয়দ মুজতবা আলী
Sayed Mujtba Ali সৈয়দ মুজতবা আলীর জন্ম ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯০৪ সালে, সিলেটের করিমগঞ্জে। পিতা খান বাহাদুর সৈয়দ সিকান্দার আলী। শান্তিনিকেতন থেকে স্নাতক ১৯২৬-এ। এরপর আফগানিস্তানে কাবুলের শিক্ষাদপ্তরে ফরাসি ও ইংরেজি ভাষায় অধ্যাপক হিশেবে যোগ দেন। দুবছর পরে স্কলারশিপ নিয়ে যান জার্মানির বার্লিন ও বন বিশ্ববিদ্যালয়ে, তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৩২ সালে। ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার নানা দেশে কর্মসূত্রে সঞ্চয় করেন বিচিত্র অভিজ্ঞতা। ১৯৩৪-৩৫ সালে পড়েন কায়রোর আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপর বরোদায় তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপনায় যোগ দেন। দেশ বিভাগের পরে চলে আসেন জন্মভূমি তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানে। ১৯৪৭ সালেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার সপক্ষে বক্তৃতা করেন সিলেটের কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদে। ১৯৪৯-এ অধ্যক্ষ হিশেবে যোগ দেন বগুড়া আজিজুল হক কলেজে। এখানে থাকাকালীন বাংলাভাষার সমর্থনে লেখেন ‘পূর্ব-পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’ শীর্ষক প্রবন্ধ। যান ভারতে। স্বল্পসময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি চাকরি শেষে যোগ দেন আকাশবাণীর উচ্চপদে, পরবর্তীতে বিশ্বভারতীর ইসলামি সংস্কৃতির প্রধান অধ্যাপক হিশেবে। সৈয়দ মুজতবা আলী ছিলেন বহুভাষাবিদ। ফরাসি, জার্মান, ইটালিয়ান ইত্যাদি ইউরোপীয় ভাষা ও আরবি, ফারসি, উর্দু, হিন্দি, সংস্কৃত, গুজরাটি, মারাঠি ইত্যাদি প্রাচ্য ও ভারতীয় সহ মোট পনেরোটি ভাষা জানতেন তিনি। বহু ভাষাবিদ, সৈয়দ মুজতবা আলী বাংলা রসরচনায় মৌলিক অবদানের জন্য অবিস্মরণীয়। উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থ “দেশে বিদেশে’, ‘শব্নম্’, ‘ময়ূরকণ্ঠী’, ‘হিটলার’, ‘চাচা কাহিনী’, ‘ধূপছায়া’, ‘জলে ডাঙায়’, ‘মুসাফির’, ‘পঞ্চতন্ত্র’, ‘অবিশ্বাস্য’, ‘ভবঘুরে ও অন্যান্য’, ‘টুনিমেম’, ইত্যাদি। ১৯৪৯-এ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নরসিংহদাস সাহিত্য পুরস্কারে সম্মানিত হন। বাংলাদেশে ফেরেন ১৯৭২-এ। ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪-এ জীবনাবসান বাংলাদেশেই। সাহিত্য ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিশেবে পান একুশে পদক ২০০৫ (মরণোত্তর)।